হনুমানের বর্তমান অবস্থান



আজো যখন হিন্দু ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী যোদ্ধাদের নাম নেওয়া হয় , তখন সবচেয়ে প্রথমে হনুমানের কথা মাথায় আসে । হনুমানের অপার শক্তির কোনো সীমা ছিল না । রামায়ণেও হনুমানের অসীম শক্তি ও ভক্তির কথা বলা হয়েছে । হনুমান ভগবান শিবের রুদ্রাবতার ছিলেন । আর রামায়ণেও হনুমান কখোনো তার শক্তিকে উচ্চতর স্তরে প্রয়োগ করেননি ।  যদি তা করতো , তাহলে সে মূহুর্তের মধ্যে লংকার বিনাশ করে দিতো । হনুমান অমরত্বের বরদান প্রাপ্ত ছিল । আর তিনি কলিযুগের শেষ পর্যন্ত এ পৃথিবীতে থাকবেন । কিন্তু আমাদের মনে এ প্রশ্ন আসে যে রামায়ণের পরে হনুমানের কি হলো ? আর এখন হনুমানজি কোথায় ?
রামায়ণের পরে মহাভারতেও হনুমানের কথা দুইবার বলা হয়েছে ।

 প্রথমবার, যখন ভিম জঙ্গলে ছিল তখন রাস্তা  দিয়ে হাটার সময় দেখলো এক বানর রাস্তায় শুয়ে আছে । ভিম বানরটিকে রাস্তা থেকে সরে যেতে বলল, কিন্তু ঐ বানরটি উত্তর দিল “তুমি আমাকে সরিয়ে দাও , আমার মধ্যে আর তেমন শক্তি অবশিষ্ট নেই” ।  তখন ভিম নিজের পুরো শক্তি প্রয়োগ করেও বানরটির লেজ পর্যন্ত সরাতে পারলো না । তখন ভিম বুঝতে পারলো যে , এটি কোনো সাধারণ বানর না । ভিম এর অনুরোধে বানরটি তার আসল রূপ দেখালো । আসলে বানরটি হনুমান ছিলেন ,আর ভিমকে শক্তির অহংকার না করার শিক্ষা দিতে এসেছিলেন ।

এরপর হনুমান অর্জুনের রথের ওপর রথের ধ্বজা হয়ে পুরো যুদ্ধে অর্জুনকে রক্ষা করেছেন । যুদ্ধ শেষে যখন হনুমান নিজের আসল রূপে ফিরে আসল আর ওখান থেকে চলে গেলো , তখন রথটি কিছু সময়ের মধ্যে পুড়ে ছাই হয়ে গেল ।  শ্রী কৃৃৃৃষ্ণ অর্জুনকে বলল , এটা হনুমান ছিল । এনার কারনেই রথ যুদ্ধে নষ্ট হয় নি । কারণ যুদ্ধে এতো বিধ্বংসি অস্ত্রের প্রয়োগ হয়েছে যা  যেকোনো জিনিসকে নষ্ট করে ফেলতে পারতো ।

মহাভারতের পরেও হনুমানের দেখা পাওয়ার কথা শুনতে পাওয়া যায় । চীন , ইন্দোনেশিয়া , কম্বোডিয়াতেও আলাদা আলাদা নামে  হনুমানের কাহিনী শোনানো হয়ে থাকে ।  আফ্রিকা থেকে আমেরিকা পর্যন্ত  শক্তিশালী বানর থাকার কথা বলা হয়ে থাকে । প্রাচীন  ঋষি মাধবাচার্য  বলেছিলেন তিনি সরাসরি হনুমানের সাথে কথা বলেছিলেন ।
তুলসি দাসও বলেছিলেন হনুমান নিজে তাকে প্রেরণা দিয়েছিলেন এবং
রামায়ণের হিন্দি অনুবাদ করতে বলেছিলেন । এরপর অনেক মানুষ হনুমানের সাথে দেখা করেছে ও কথা বলেছে এমনটা দাবি করেছে ।
আজও সবাই বিশ্বাস করে যে ,যেখানে সত্য মনে রাম নাম নেওয়া হয় ,সেখানে হনুমান চলে আসেন ।

শ্রীলংকায় হনুমানের পায়ের চিহ্নকে আজও ওনার প্রমাণ মানা হয় । হনুমান বরদানের মাধ্যমে অমরত্ব প্রাপ্ত করেছিলেন , আর তিনি কলিযুগের শেষ পর্যন্ত এ পৃথিবীতে থাকবেন । যখন কল্কি অবতার পাপের বিনাশ করবে এবং পুনরায় সত্যযুগের আরম্ভ করবেন ,তখন হনুমানও ঐ মহাশক্তিতে লিন হয়ে যাবেন ।


Comments

Popular posts from this blog

মহাভারতের শহরগুলো কোথায় আছে জেনে নিন

ভারত ভেঙে তা আজ ১৫ টি আলাদা দেশ (with map)

মহাদেবের সংক্ষিপ্ত পরিচয়